প্রাকৃতিক শ্যম্পু
নিজেই বানিয়ে নিন প্রাকৃতিক শ্যম্পু ১ লিটার পানি, ৫০ গ্রাম রিঠা, ৫০ গ্রাম শিকাকাই, ২৫ গ্রাম আমলকি, ২-৩ চা চামচ মেথি এবং ১ চামুচ কালোজিরা। স্মেলের জন্য এড করতে পারেন কমলার শুকনো খোসা, অথবা কাঁচা লেবুর খোসা।.
সবগুলো উপাদান একসাথে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে উপকরণগুলো ভালো করে চিপে রস নিঃসরণ করে সেই রস চুলোয় আধাঘন্টার মতো হালকা আঁচে জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা হলে ভালো করে ছেঁকে নিলেই তৈরি হয়ে গেলো প্রাকৃতিক শ্যাম্পু।.উপকারিতা :এটি চুলের গোড়ায় সুষম পুষ্টি যোগাবে। ফলে চুল পড়া বন্ধ হবে৷ নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। খুশকি, উকুন দূর হবে৷ শ্যাম্পুর সাথে কন্ডিশনারেরও কাজ দিবে। শ্যাম্পুর পিছনে হাজার হাজার টাকা খরচ বাঁচাবে।
সবচেয়ে বড় কথা, স্কিন ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচাবে, ইনশাআল্লাহ।.ব্যবহারবিধি :সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২ দিন ব্যবহার করুন। এর বেশি ব্যবহার করা উচিত হবে না। উত্তম হলো প্রতিবার বানিয়ে ব্যবহার করা। সম্ভব না হলে ১ লিটারের মতো বানিয়ে ফ্রিজে রেখে মাসে ৪-৮ বার ব্যবহার করতে পারেন।আমলকি, মেথি, কালিজিরা ছাড়াও শুধু রিঠা এবং শিকাকাই দিয়ে প্রাকৃতিক শ্যম্পু বানাতে পারবেন। রিঠা এবং শিকাকাই আমাদের www.krishokbhai.com ওয়েবসাইটে পাবেন।
শিকাকাইকে “হেয়ার ফ্রুট” ও বলা হয় যা গুল্ম বা ঝোপ জাতীয় গাছের ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Acacia concinna যা মধ্য ইন্ডিয়ায় উৎপন্ন হয়।শিকাকাই চুল ও শরীর পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার আসছে বহু বছর যাবত।শিকাকাই এর বাকলে স্যাপোনিন থাকে যার কারণে পানিতে মিশিয়ে নাড়ালে সাবানের মতই ফেনা উৎপন্ন হয়।
শিকাকাই এ উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি থাকে,সেই সাথে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা স্বাস্থ্যবানচুলের জন্য প্রয়োজন এবং দ্রুত চুল গজাতে সাহায্য করে। শিকাকাই এর ব্যবহার গুলো জেনে নেই আসুন।
চুলের জন্য শিকাকাই এর ব্যবহার :১। প্রাকৃতিক শ্যম্পু হিসেবে শিকাকাই এর পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাথার তালুতে লাগিয়ে ২ মিনিট ঘষুন। তবে এতে সাবান বা শ্যাম্পুর মত ফেনা হবেনা কিন্তু আপনার চুল ঠিকই পরিষ্কার হবে।
প্রথম প্রথম ব্যবহারের ফলে চুল রুক্ষ মনে হতে পারে। এই অবস্থা ঠিক করার জন্য চুল ধোয়ার পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন বা সামান্য তেল ব্যবহার করতে পারেন।শিকাকাই, রিঠা ও শুকনো আমলা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে গরম করে নিন যতক্ষণ না শিকাকাই নরম হয়। ঠান্ডা হলে হাত দিয়ে ভালো করে পিষে নিয়ে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন।মাথার তালু পরিষ্কারের জন্য এই মিশ্রণটি বা শ্যাম্পুটি অনেক ভালো কারণ এতে কোন প্রকার ক্ষতিকর রাসায়নিক নেই।
২। খুশকি দূর করার জন্য শিকাকাই এ অ্যান্টি ফাঙ্গাল বা ছত্রাক নাশক উপাদান এবং পুষ্টিকর উপাদান আছে। ছত্রাক নাশক উপাদান মাথার তলুকে খুশকির সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবংপুষ্টি উপাদান মাথার তলুকে পুষ্টি সরবরাহ করে। শিকাকাই নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি দূর হবে।
৩। চুল ঘন ও শক্তিশালী করে চুলের গোড়া শক্ত ও স্বাস্থ্যবান রাখে শিকাকাই। হেয়ার প্যাক হিসেবে বা তেলের সাথে মিশিয়ে শিকাকাই ব্যবহার করা যায়।শিকাকাই পাউডার নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। চুলকে ঘন ও শক্তিশালী করতে এটা অনেক কার্যকরী।
৪। চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ করে চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ করতে শিকাকাই অনেক জনপ্রিয় উপাদান। আমলা, শিকাকাই ও রিঠা দিয়েপ্যাক তৈরি করে মাথায় ও চুলে লাগালে অল্প বয়সে চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ করা যায়।
৫। চুল পড়া কমায় নিয়মিত শিকাকাই ব্যবহার করলে চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। এটা চুলের ভেঙ্গে যাওয়া ও ফেটে যাওয়া রোধ করে যা চুল পড়ার প্রধান কারণ।৬। ক্ষত নিরাময়ে মাথার তালুর ছোট কোন ক্ষত বা পোড়া ভালো করতে পারে শিকাকাই। শিকাকাই এর পেস্ট মাথার তালুতে লাগিয়েকিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। মাথার তালুর ছোটখাট কোন কাটা বা ক্ষত বা ফুসকুড়ি ভালো করে এই শিকাকাই থেরাপি।
রিঠার উপকারিতা
রিঠাতে থাকা উপাদান সমূহ চুলের ডগা ফাটা বন্ধ করে দেয়।
চুলের ঘনত্ব বাড়ে। চুল পড়া কমে যায়।
উকুনের সমস্যা থাকলে তা সহজে কোন সাইড এফেক্ট ছাড়া সমাধান হয়ে যায়।
রিঠা দিয়ে শ্যাম্পু করলে কণ্ডিশনার লাগানোর প্রয়োজন থাকে না। ফলে চুল বেশি ভালো ও মজবুত থাকে।
মাথায় একজিমার সমস্যা থাকলে সহজে দূর হয়ে যায় রিঠা ব্যবহারের ফলে
চুল কোঁকড়ানো তা সোজা হয়ে যায়। চুল নরম ও মসৃণ করে রিঠা।
সুন্দর চুলের অধিকারী হতে চান তাহলে সপ্তাহে একদিন রিঠা ব্যবহার করুনসুন্দর চুলের অধিকারী কে না হতে চায়। তার জন্য সামান্য যত্ন নিতে হবে। কিভাবে নেবেন?চুলের সমস্যায় আমরা কম বেশি সবাই জর্জরিত। বর্তমান সময়ে বাইরের পলিউশান আমাদের চুল পড়ে যাওয়ার জন্য বেশি দায়ী। তাছাড়া চুলের জন্য ব্যবহৃত শ্যাম্পুতে থাকা কেমিক্যালতো আছেই।
কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চুল বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। চুলের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ব্যবহার করুন রিঠা। সুন্দর চুলে যদি চান তাহলে সপ্তাহে একদিন রিঠা ব্যবহার করুন চুলের যত্ন নিতে।রিঠা একধরনের ফল। ইংরেজিতে Soapnut বলে। এই রিঠার বৈজ্ঞানিক নাম Sapindus mukorossiএর ব্যবহার সাধারণত হয়ে থাকে সাবান হিসেবে। চুলের জন্য একে একপ্রকারের প্রাকৃতিক শ্যাম্পু বললে খুব একটা ভুল হবে না।
ভারতবর্ষে প্রাচীন সময় থেকে রিঠাকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নানাভাবে ব্যবহার করা হয়ে এসেছে। বিশেষ করে চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে রিঠার নাম সারা বিশ্ব জানে।কেন রিঠা ব্যবহার করা উচিতরিঠা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক গুনাগুণ সম্পন্ন একটি উপাদান। এতে কোন প্রকারের কেমিক্যাল নেই। শ্যাম্পুতে থাকা সোডিয়েম লরেথ সালফেট ও সিলিকনের মত ক্ষতিকারক উপাদান রিঠাতে থাকে না। এই উপাদানগুলি থাকার ফলে বাজার চলতি ভালো কোম্পানির শ্যাম্পু ব্যবহার করলেও চুল পড়া কমে না।
বরং চুল বেশি করে উঠে যায়। কিন্তু রিঠা ব্যবহারের ফলে চুলের কোন প্রকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাছাড়া চুল পড়া বন্ধ হয়। নতুন চুল গজায়। খুসকি হয় না। উকুন থাকলে মাথায় তা মরে যায়।
।
ঠাণ্ডা হলে শ্যাম্পুর মত ব্যবহার করুন। বাকি অংশ আপনি ফ্রিজে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত রেখে ব্যবহার করতে পারবেন।সপ্তাহে একবার করে যদি রিঠা শ্যাম্পু রূপে ব্যবহার করেন তাহলে চুলের সমস্যা থাকবেনা বলা যায়। তবে নিয়ম করে ব্যবহার করলে নিয়মিত তবে ফলাফল পাওয়া যাবে। চুলের পরিমান অনুযায়ী রিঠা ব্যবহার করা উচিত। শ্যাম্পু করার সময় ৫ মিনিট ভালো করে মাথা ম্যসাজ করুন।
।রিঠার উপকারিতা
১. রিঠাতে থাকা উপাদান সমূহ চুলের ডগা ফাটা বন্ধ করে দেয়। আমাদের মাথার স্কিন এর যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়।
।২. চুল প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে পরিষ্কার হওয়ার ফলে চুলের ঘনত্ব বাড়ে। চুল পড়া কমে যায়।
।৩.উকুনের সমস্যা থাকলে তা সহজে কোন সাইড এফেক্ট ছাড়া সমাধান হয়ে যায়। রিঠা দিয়ে শ্যাম্পু করলে কণ্ডিশনার লাগানোর প্রয়োজন থাকে না। ফলে চুল বেশি ভালো ও মজবুত থাকে।
।৪.মাথায় একজিমার সমস্যা থাকলে সহজে দূর হয়ে যায় রিঠা ব্যবহারের ফলে।
।৫.নিয়মিত ব্যবহার করলে যাদের চুল অতিরিক্ত মাথায় কোঁকড়ানো তা সোজা হয়ে যায়। চুল নরম ও মসৃণ করে রিঠা।যা যা খেয়াল রাখা প্রয়োজনচুল শুষ্ক ধরণের হলে অল্প পরিমানে৷রিঠা ব্যবহার করা চুলের জন্য ভালো।